প্রার্থনা বলতে কোন এক অদৃশ্য শক্তির কাছে সাহায্য কামনা করা বুঝানো হয়ে থাকে। মানুষ সাধারণত দু’ভাবে প্রার্থনা করে থাকে, (১) এমন কোন সমস্যায় পতিত হওয়া যখন তার পক্ষে আর কিছুই করার থাকে না তখন সে নিজের অজান্তেই কোন এক অদৃশ্য শক্তির কাছে সাহায্য কামনা করে। এমনকি যারা সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব স্বীকার করেন না, তারাও নিজের অজান্তেই বলে থাকেন, হে প্রকৃতি তুমি এত নিষ্ঠুর কেন, আমার প্রতি একটু সদয় হও। অর্থাৎ তার ক্ষেত্রে এই প্রকৃতিই হচ্ছে অদৃশ্য শক্তি। (২) কোন এক বিধিবদ্ধ নিয়মের আলোকে অর্থাৎ নির্দিষ্ট ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে। যুগে যুগে পৃথিবীতে নানা ধর্মের আর্বিভাব ঘটেছে যার সাথে সংশ্লিষ্ট কোন এক অদৃশ্য শক্তি তথা আল্লাহ/ঈশ্বর/ভগবান কিংবা অন্যকোন দেব-দেবী। যারা মূর্তি পূঁজার মাধ্যমে প্রার্থনা করেন তারাও মূর্তির অন্তরালে কোন এক অদৃশ্য শক্তিকেই স্মরণ করেন, যৌক্তিক না অযৌক্তিক সেটা ভিন্ন কথা।

কোন মানুষ যদি প্রার্থনা দ্বারা নিজে আত্মতুষ্টি অর্জন করতে সক্ষম না হন তাহলে তার প্রার্থনা কেবলই লোকাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। যদি কোন মানুষ প্রার্থনা দ্বারা নিজে আত্মতুষ্টি অর্জন করেন অথচ অন্যদের ভালো-মন্দের ব্যাপারে বেখবর উপরন্তু আপন ভোগবিলাসের জন্য যা ইচ্ছে তাই করেন তাহলে তিনি নিশ্চিত একজন মানসিক রোগী। আর যদি কোন মানুষ প্রার্থনা দ্বারা নিজে আত্মতুষ্টি অর্জন করেন এবং অন্যের ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবাটা তার কাছে দায়িত্ব বলে বিবেচিত হয় এবং তিনি তদানুযায়ী কর্মপরিকল্পনা করেন তাহলে এটাই হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে স্বার্থক প্রার্থনা।

সারা জীবন ধরে স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য প্রার্থনা করলাম অথচ জানতেও পারলাম না স্রষ্টা সন্তুষ্ট হয়েছেন কি না, এরূপ প্রার্থনা অনর্থক। প্রার্থনার মাধ্যমে কোন মানুষ আত্মতুষ্টি অর্জন করার পর যদি দুনিয়ার ভোগবিলাস তার কাছে একটা নগণ্য বিষয় বলে বিবেচিত হয় তখনই মহান সৃষ্টিকর্তা তার প্রতি সন্তুষ্ট হন। কাজেই প্রার্থনা হওয়া উচিৎ নিজের আত্মতুষ্টির জন্য, কেননা নিজের আত্মতুষ্টির মাঝেই রয়েছে স্রষ্টার সন্তুষ্টি।

By admin

One thought on “আমার প্রার্থনা আমার নিজের আত্মতুষ্টির জন্য, স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নয়”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *