স্বপ্ন দেখে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। প্রশ্ন হচ্ছে স্বপ্ন আসলে কোনটা? ড. এপিজে আব্দুল কালাম এর মতে, “A dream is not that which you see while sleeping, it is something that does not let you sleep”. অর্থাৎ “স্বপ্ন সেটা নয় যেটা তুমি ঘুমিয়ে দেখো, স্বপ্ন সেটাই যা তোমাকে ঘুমাতে দেয় না”। তাহলে এমন কী দেখার আছে যা আমাকে ঘুমাতে দেয় না? অনেক শিক্ষার্থী ভবিষ্যতে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখেন, এটা কি স্বপ্ন নয়? ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে পারলে ভবিষ্যতে স্বাচ্ছন্দময় জীবন-যাপন করা যাবে, এটাই কি স্বপ্নের মূল উদ্দেশ্য?
সাগরের একটি নীল তিমির একবার নিঃশ্বাস নিতে খরচ হয় ৭৭০ কিলো ক্যালরি। তাহলে সারাদিনে একটি তিমির কী পরিমাণ ক্যালরির প্রয়োজন, ভেবে দেখেছেন কি? একটি পূর্ণ বয়ষ্ক তিমি এক গ্রাসে যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে তা দ্বারা ৮,৩০৬ থেকে ৪,৫৬,৮৩৫ পর্যন্ত ক্যালরি অর্জিত হয়। আর একটি নীল তিমির এক গ্রাসের খাবারে যে পরিমাণ ক্যালরি থাকে তা দ্বারা ২২৮ জনেরও বেশি মানুষের এক দিনের ক্যালরির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এত বিশাল পরিমাণ ক্যালরি অর্জনের জন্য নীল তিমি কি ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে? যদি তা নাহয় তাহলে মানুষকে কেন সামান্য পরিমাণ ক্যালরির চাহিদা পূরণ করার জন্য ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখতে হবে, যেখানে একজন পূর্ণ বয়ষ্ক মানুষের সারাদিনে ক্যালরির প্রয়োজন হয় মাত্র ১,৬০০ থেকে ৩,০০০ পর্যন্ত।
যদি কোন শিক্ষার্থী গোটা দেশ ও জাতির ক্যালরির যোগান দানের কথা চিন্তা করে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন দেখে, সেটা হয়তো আলাদা কথা। কিন্তু বাস্তবে এটি হচ্ছে একটি দিবাস্বপ্ন। শিক্ষার্থীর স্বপ্ন দেখার বীজ বপনের সূত্রপাত ঘটার কথা পাঠশালা থেকে, কিন্তু এখন তা হয় না। পাঠশালা এখন শিক্ষার্থীকে স্বপ্ন দেখায় না বরং স্বপ্ন গেলায়। আর তাই সামান্য পরিমাণ ক্যালরির চাহিদা পূরণ করার জন্য আজকাল শিক্ষাথীদেরকে কত কিই না করতে হয়। অদূর ভবিষ্যতে পাঠশালাগুলো আবারও শিক্ষার্থীদের স্বপ্নের বীজ বপনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হবে, এটা প্রত্যাশা করাটাও হয়তো আমার ক্ষেত্রে একটা দিবাস্বপ্ন।
How nice your article I just like.