বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন বলেছিলেন, মানুষের পূর্বপূরুষ ছিল বানর। কিন্তু যারা ঐশি ধর্মে বিশ্বাস করেন তাদের কাছে চার্লস ডারউইন এর মতবাদ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা, ঐশি গ্রন্থগুলো সাক্ষ্য দেয় যে, পৃথিবীর আদি মানব ও মানবী হচ্ছেন বাবা আদম(আ.) ও মা হাওয়া আর এটাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইন এর মতবাদ সঠিক না হলেও বানরের পূর্বপুরুষ যে মানুষ ছিল সেটাও কিন্তু ঐশি গ্রন্থে লেখা আছে। পবিত্র কুরআনের ভাষায়, “তোমরা তাদেরকে ভালরূপে জেনেছ, যারা শনিবারের ব্যাপারে সীমা লঙ্ঘণ করেছিল। আমি বলেছিলামঃ তোমরা লাঞ্ছিত বানর হয়ে যাও(সুরা বাকারা/৬৫)”। শনিবারের ঘটনা আমার এ লেখার বিষয়বস্তু নয় বরং বর্তমান যুগের ছেলেমেয়েদের মাঝে বানরের স্বভাবটা ইদানিং খুব বেশী পরিলক্ষিত হচ্ছে, আমার লেখার বিষয়বস্তু সেটা।

একদিন এক দর্জি এক গ্রাহকের প্যান্ট বানাতে গিয়ে ভুলক্রমে কোমরের হাইটটা কম করে ফেলল। গ্রাহককে ডেলিভারী দেয়ার সময় গ্রাহক আপত্তি জানালে চালাক দর্জি গ্রাহককে বুঝালো যে এটাই এখন প্রচলিত। বোকা গ্রাহক দর্জির কথা বিশ্বাস করে প্যান্ট নিয়ে যখন পরতে শুরু করলো তা দেখে অন্যান্যরাও অনুকরণ করতে শুরু করে দিল। বর্তমানে ছেলেদের প্যান্টের অবস্থা এমন হয়েছে যে, যদি কখনো চলতি পথে কারো হাত ফসকে কিছু একটা মাটিতে পড়ে যায় তাহলে ওটা তুলতে গেলে পিছনের মানুষগুলো তার পাছা দেখে ফেলে, বিশেষ করে যদি পরনে প্যান্ট ও গেঞ্জি থাকে।

পৃথিবীতে মানুষ ভিন্ন অন্যকোন প্রাণী পোশাক পরিধান করে বলে আমার জানা নেই। সম্ভবত মানুষই একমাত্র প্রাণী যারা পোশাক পরিধান করেন যার একটি অন্যতম কারণ হচ্ছে শরীরের কিছু উল্লেখযোগ্য অংশ আড়াল করে রাখা। পেশাক পরিধান করেও যদি তার ব্যত্যয় ঘটে তাহলে তা পোশাক না পরার থেকে আরও বেশী অশালীন।

মেয়েদের পোশাকের কথা কী আর বলবো? এক পোশাক কারখানার মালিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে ক্যাম্পাসে ঝোপের আড়ালে প্রেমিকার সাথে আড্ডা দিতে গিয়ে একবার কোন কারণে নিজেকে লুকানোর জন্য প্রেমিকার স্যালোয়ারের পায়ের ভিতর প্রবেশ করে কোন রকমে নিজেকে আড়াল করেছিলেন। এখন সে মহিলাদের স্যালোয়ার তৈরীর কোম্পানীর মালিক। সেদিন প্রেমিকার সরু স্যালোয়ারের পায়ের ভিতর ঢুকতে গিয়ে কতইনা কষ্ট হয়েছিল তার। তাই তিনি ভাবলেন, যদি একদম ঢিলেঢালা করে মেয়েদের স্যালোয়ার বানানো যায় তহালে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বর্তমান যুগের ছেলেমেয়েরা বেশ উপকৃত হবে আর বাজারে এর চাহিদাও বেশ বেড়ে যাবে। ব্যাস, যেমন চিন্তা তেমন কাজ। আজকের মেয়েরা প্লাজু নামে যে স্যালোয়ার পরিধান করে তাতে এটা পরিষ্কার বুঝা যায়, রূচিবোধ বলতে এখনকার ছেলেমেয়েরা অন্যদের অনুকরণ করাকেই বোঝে।

পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে একজন সুস্থ্য মানুষের বিচার করা উচিৎ এটা পরিধান করা কতটা আরামদায়ক ও রুচিসম্মত। অন্যরা এটা পরছে বলে আমাকেও পরতে হবে এমন মাথার দিব্যি তো কেউ দেয়নি। যে ধরণের পোশাক দৃষ্টিকটু, সেটা আর যাইহোক যুগের চাহিদা বলে পরিধান করার অর্থই হচ্ছে বানরের মতো অনুকরণ করা। আর জ্ঞানীরা কখনোই বানরের মতো অনুকরণ করেন না বরং সর্বদা ভালোটা অনুসরণ করেন।

By admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *